DHAKA WEATHER

এই চেয়ার যে বসবে সেই মারা যাবেঃ ডেথ চেয়ার


ইংল্যান্ডের উত্তর ইয়োর্কশায়ারের Busby Stoop Inn নামে এক সরাইখানা রয়েছে। মানুষজনের কাছে জায়গাটি রহস্যময় হিসেবে পরিচিত। কারণ এখানে রয়েছে এমন এক অভিশপ্ত চেয়ার, যার নাম ‘Chair of death’।
আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগের কথা। ১৬৬৯ সালে থমাস বাসবি নামে এক অপরাধীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। তো মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আগে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়। থমাস বাসবি একটি প্রিয় পানশালা ছিল। সেই পানশালায় তার নিজের একটি প্রিয় চেয়ারও ছিল। তো সে তার জীবনের শেষ ইচ্ছা স্বরূপ তার প্রিয় সেই পানশালা ও প্রিয় সেই চেয়ারে বসে জীবনের শেষ খাবার খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। যথারীতি তার জীবনের শেষ ইচ্ছা পূরণ করা হয়। খাওয়া শেষে থমাস বাসবি চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়েই বলে ওঠে, ‘এই চেয়ারে যে বসবে সেই হঠাৎ করে মারা যাবে’। তার এই কথা শুনে এরপরের ২০০ বছর কেউ আর সাহস করে সেই চেয়ারে বসে নি।

রহস্যময় এই চেয়ারের হত্যাযজ্ঞ শুরু হয় ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। সে সময় একজন বৈমানিক সেই পানশালাতে এসে থমাস বাসবির সেই অভিশপ্ত চেয়ারটিতে বসেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধ থেকে সে আর বাড়ি ফিরে যেতে পারেন নি। এই ঘটনাকে কাকতালীয় বলে চালিয়ে দেওয়া গেলেও এর পরের ঘটনাগুলোকে কাকতালীয় বলে চালিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। যে সৈন্যই এই চেয়ারে বসেছে তাদের সবার পরিণতিই একই হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর দুইজন পাইলট ওই চেয়ারে বসেছিলেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে পানশালা থেকে বের হয়েই তারা এক ট্রাক দুর্ঘটনায় মারা যান। ১৯৭০ সালে একজন স্থপতি এই চেয়ারে বসে এই অভিশাপ ভুল প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন। সেদিন বিকেলে তিনি এক গর্তে পড়ে মারা যান। এরপর আরেক ছাদ ঢালাইকারী ওই চেয়ারে বসেন, আর ছাদ থেকে পড়ে মারা যান। আরেক মহিলা মারা যান মস্তিষ্কের টিউমারে ওই চেয়ারে বসার পর। এমন ঘটনা একের পর এক ঘটতেই থাকে।
একের পর এক এরকম ঘটনায় ভড়কে যান পানশালার মালিক। তাই তিনি চেয়ারটিকে তার পানশালার বেসমেন্টে রাখার নির্দেশ দেন। যে কর্মচারী চেয়ারটিকে বেসমেন্টে রাখার জন্য যান, তিনি বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় সেই চেয়ারটিতে বসেছিলেন। সেদিনই এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।
এরপর মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ১৯৭২ সালে ইংল্যান্ডের উত্তর ইয়র্কশায়ারের স্থানীয় এক জাদুঘরে চেয়ারটিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওটা জাদুঘরও নয়, বাসবি স্টপ ইন নামের সরাইখানা। যাতে সেটিতে কেও বসতে না পারে সেজন্য চেয়ারটি মাটি থেকে ৫ ফুট উপরে ঝুলিয়ে রেখে প্রদর্শন করা হচ্ছে।
শুধু চেয়ার নয়, রহস্য থমাসকে নিয়েও। অনেকেই থমাসকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছে। এতসব ঘটনার পরও বর্তমান সময়ে এটিকে কাকতালীয় বলাটাই স্বাভাবিক। তারপরও বিষয়গুলো একটু চিন্তা করলে কিছুটা রহস্য থাকাটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post